বাংলাদেশের জিআই পণ্যের হালচাল
বাংলাদেশে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের কার্যক্রম শুরু হয়েছে এক দশক আগে। তবে শুরুতে এর তেমন আলোচনা চোখে পড়েনি। সম্প্রতি নতুন কয়েকটি জিআই পণ্য স্বীকৃতি পাওয়ার পর তা বেশ পরিচিত একটি টপিকে রূপ নিয়েছে। জিআই পণ্যের আলোচনা সামনে আনতে আরিফা মডেলেরও ভূমিকা রয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে খাতুন এ জান্নাত আশা আপু জিআই পণ্য নিয়ে রাজিব আহমেদ স্যারকে আইডিয়া দেওয়ার কারণে এ বছরের শুরু থেকে ফেসবুকে আলোচনা শুরু হয় জিআই পণ্য নিয়ে। এরপর থেকে দেশি পণ্যের ছোট ছোট ফেসবুক গ্রুপগুলোতে আন্তরিকতার সাথে আলোচনার গতি পায়। বলা যায় জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত একদিনও বাদ যায়নি জিআই পণ্যের আলোচনা তথা পোস্ট কমেন্ট করা।
জিআই পণ্যকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো মিটআপ ও ইভেন্ট আয়োজন করেছে আরিফা মডেলের আরিফারা। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সাথে যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুটি সেমিনার। এছাড়া মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, উত্তরা, পুরান ঢাকা, ধানমন্ডি সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে জিআই পণ্যের ইভেন্ট।
নানা জায়গাতে জিআই পণ্যকে তোলে ধরার জন্য কাজ করছে ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি)। আরিফা মডেল ও ইডিসির সহযোগিতায় নতুন কিছু জিআই আবেদনের পাশাপাশি পুরাতন কিছু আবেদনে ডকুমেন্টেশন তৈরি করে অগ্রগতিতে সামিল হয়েছে। ইডিসির সহযোগিতায় নাটোরের কাঁচাগোল্লার ডকুমেন্টেশন ও আবেদন সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসকের কার্যালায় নাটোর। এটি ইতিমধ্যে দেশের সর্বশেষ অর্থাৎ ১৭ নং জিআই পণ্য। এছাড়াও টাঙ্গাইলের চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, মুক্তাগাছার মন্ডা, মনিপুরি শাড়ি, গোপালগঞ্জের সরগোল্লা, নরসংসিংদীর লটকন ও অমৃত সাগর কলা, রাজশাহীর মিষ্টি পান, মাগুরার হাজরাপুরের লিচু, শেরপুরের ছানার পায়েসের ডকুমেন্টেশন ও আবেদনে সহযোগিতা করেছে।
জিআই পণ্য নিয়ে খুব ভালোভাবে কাজ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। তারা সম্প্রতি স্বীকৃতি দেওয়া পণ্যগুলোর সদন বিতরণের জন্য বড় একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে যা, গণমাধ্যমে খুবই গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জিআই পণ্যের আবেদনে উৎসাহী হচ্ছে। গণমাধ্যমগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ ফিচার প্রকাশ হচ্ছে। এরফলে ১০ বছর আগের আর ১০ বছরের অবস্থা অনকে উন্নত হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের জিআই পণ্যের সংখ্যা ১৭টি। হয়তো এই বছরেই আরও কয়েকটি পণ্য স্বীকৃতি পাবে অথবা আগামী বছরের শুরুতে। গত ১০ বছরে জিআই পণ্যের সংখ্যা ছিল মাত্র ১১টি আর গত ১১ মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে আরও ৬টি জিআই পণ্য। জিআই এর উপকারভোগীরা রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছে। যা জিআই স্বীকৃতির একটি অন্যতম উদ্দেশ্য।