বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য অঞ্চলগুলোর মধ্যে খুলনা গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্য চাষে বিশেষ করে মিঠা পানির মাছের দিক থেকে খুলনা অনেক এগিয়ে আছে। পিছিয়ে নেই নোনা পানির মাছও। রপ্তানি ভ্যালু বাড়াতে চিংড়ি সহ অন্যান্য মাছ, কৃষি পণ্য, প্রাকৃতি পণ্য সহ সম্ভাব্য সব ধরণের পণ্যের জিআই স্বীকৃতি চাওয়া দরকার। পৃথিবী বিখ্যাত বন সুন্দরবন এখানে অবস্থিত। এই বনের মধু সহ যেসব পণ্য জিআই স্বীকৃতি অর্জনের যোগ্যতা রাখে তা নিয়ে এখুনি চেষ্টা করার সময় ও সুযোগ এসেছে। খুলনার চুইঝালের পরিচিতি সারাদেশেই রয়েছে। আজকে আলোচনা করবো খুলনার সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।
খুলনার সম্ভাব্য জিআই পণ্য চুইঝাল
বাংলাদেশের মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে চুইঝাল অন্যতম। এটি বেশ পুরাতন একটি মশলা। খুলনার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সাথে চুইঝালের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মাছ ও মাংসের সাথে ব্যবহৃত হলেও মাংসা রান্নাতেই বেশি ব্যবহার হয় চুইঝাল। এটি রান্না ও রান্না ছাড়া উভয় ভাবে খাওয়া যায়। এটি প্রায় সব অঙ্গই খাবারের উপযুক্ত এবং ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে।
পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় সহ যেকোন আচার-অনুষ্ঠানে গুরুত্ব পায় চুইঝাল। নতুন আত্মীয় আপ্যায়নেও চুইঝালের কদর রয়েছে। চুইঝালের জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে এর পরিচিতি ও বাজার সারাদেশে তৈরি করার সুযোগ রয়েছে।
ফুলতলার গামছা
ফুলতলার গামছার পুরানো ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। এখানকার গামছার রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য। বহু রঙ, নকশা, বুননের কারণে এই গামছার কদর সর্বত্র এবং টিকে আছে দুই শতাব্দি ধরে। কয়েকশ পরিবারের রুটি-রুজি হয় এই গামছা থেকে। ফুলতলার গামাপল্লীর সুদিন ফেরাতে ভূমিকা রাখতে পারে জিআই স্বীকৃতি। জিআই স্বীকৃতি ফুলতলার গামছার পরিচিতি বাড়াতে এবং বাজার সম্প্রসারণ করতে ভূমিকা রাখতে পারে। এই স্বীকৃতি অর্জনের মাধ্যমে দুই আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে যাওয়া যাবে আরও বহুদূর। ৩০০ পবরিবার থেকে উত্তরোত্তর প্রসার হতে পারে তাঁতিদের সংখ্যা। তাই ফুলতলার গামছার জিআই স্বীকৃতির জন্য কাজ করা দরকার।
উল্লেখিত দুটি পণ্য ছাড়াও দুবলার চরের শুটকি, খুলনার গলদা, ভেটকি মাছ, মাদুর সহ সম্ভাব্য সব পণ্যের জিআই স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করা দরকার।