কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য

কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য

দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয় কুষ্টিয়াকে। কারণ লালন শাহের মাজার, মীর মোশাররফ হোসেরন বসভিটা, রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িও কুষ্টিয়াতে। তাই সংস্কৃতিক অঙ্গনে কুষ্টিয়া দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা।

আশেপাশের অন্য জেলারগুলোর মতো কুষ্টিয়ার অর্থনীতি কৃষি নির্ভর রয়েছে। এখানে কৃষির পাশাপাশি রয়েছে অন্যান্য শিল্প কারখানা। এখানকার তাঁত শিল্প বেশ সমৃদ্ধ। জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার মতো কুষ্টিয়ায় অনেক পণ্য থাকলেও সম্প্রতি কুষ্টিয়ার তিলের খাজা জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। এটিই জেলার প্রথম ও একমাত্র জিআই পণ্য। এছাড়াও বেশ কিছু পণ্য জিআই স্বীকৃতির অর্জনে সকল শর্ত পূরণে সক্ষম। তাই আজকে আলোচনা করবো কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।

কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য কুমারখালীর গামছা
কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য কুমারখালীর গামছা

কুমারখালীর গামছা

প্রাচীনকাল থেকে বিখ্যাত কুমারখালীর গামছা। কুমারখালীর তাঁত শিল্পের সাথে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির উপস্থিতিতেও পাওয়া যায়। এছাড়াও কুষ্টিয়ার সমৃদ্ধ সমৃদ্ধ বইগুলোতেও রয়েছে এই গামছার উপস্থিতি। এছাড়াও সারাদেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে কুমারখালীর গামার পরিচিতি ও ব্যবহার। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে গামছা।

গামছার ব্যবহার সহজলভ্য এবং সব শ্রেণি পেশার মানুষ গা মোচা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই গামছার ব্যবহার করে। কবিগুরুও তাঁর কবিতায় লিখেছিলেন, ‘তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাহিবার কালে, গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।’ লালন মেলার সাথে কুমারখালীর গামছার ব্যবহার অবিচ্ছেদ্য। এই গামছায় রয়েছে রঙ বেরঙের নকশা। গা মোচা ছাড়াও নানা ফ্যাশন তৈরি হয় গামছা থেকে। কুমারখালীর গামছার জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে এর পরিচিতি ও বাণিজ্যিক প্রসার আরও বহুদূর নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটি কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্যের মধ্যে অন্যতম।

কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য কুমারখালীর চাদর
কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য কুমারখালীর চাদর

কুমারখালীর চাদর

কুমারখালীর তাঁত বস্ত্রের মধ্যে চাদরের পরিচিতি ব্যাপক পরিসরে। ঈদ পার্বর্ণে কুমিরখালীর চাদর ছাড়া ভাবতেই পারে না কুষ্টিয়া ও আশেপাশের মানুষ। এই চাদর বলতে শাল নয়, বিছানার চাদরকে বুঝায়। কুষ্টিয়ার গামছার রেফারেন্স যত জায়গাতে পাওয়া যায় প্রায় ঠিক তত জায়গাতেই রেফারেন্স পাওয়া যায় কুমারখালীর চাদরের। এই চাদরের দৃষ্টিনন্দন বাহারি নকশা আর আমার প্রিয়তাই জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ। জিআই স্বীকৃতি চাওয়া যেতে পারে কুমারখালীর চাদরের। এতে করে কুষ্টিয়া অঞ্চলের এই চাদেরর বাণিজ্যিক সুবিধার সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হবে। কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্যের মধ্যে অন্যতম।

কুষ্টিয়ার কুলফি মালাই
কুষ্টিয়ার কুলফি মালাই

কুলফি মালাই

কুষ্টিয়ার একটি বিখ্যাতে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে কুলফি মালাই অন্যতম। কুলফি মালাইয়ের স্বাদ অন্য যেকোন আইসক্রিমের চেয়ে ভিন্ন। এটির আকৃতি, উৎপাদন পদ্ধতি সহ সবকিছুই ভিন্ন। এক সংবাদ সূত্রে জানা যায়, “লোকমুখে প্রচলিত, এই সময়েই সম্ভবত কুষ্টিয়ার কুলফির প্রতি আকৃষ্ট হন স্বয়ং কবিগুরু।” কারণ ঠাকুর পরিবারের জমিদারী সূত্রে কবিগুরু কুষ্টিয়ার শিলাইদহ গ্রামে ছিলেন। এই কুলফি মালাই দেশের বিভিন্ন জায়গাতে উৎপাদন হলেও কুলফি মালাইয়ের স্বাদ অন্যতম। এই স্বাদ অন্য কোথাও নেই। এই বিখ্যাত পণ্যটিও কুষ্টিয়ার সম্ভাব্য জিআই পণ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Leave a Reply

Scroll to Top