দেশের যে কয়টি জেলা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি অর্জন করেছে এর একটি রংপুর। শতরঞ্জি এ জেলার প্রথম জিআই পণ্য। তবে আরও কিছু পণ্যের জিআই স্বীকৃতি অর্জনের সুযোগ আছে। তাই আজকে আলোচনা করবো রংপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।
রংপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য
বৈরালি মাছ
এক প্রকার স্বচ্ছ পানির মাছ বৈরালি। তা তিস্তা-ধরলা নদীতে জন্মায়। বৈরালি খুবই সুস্বাদু মাছ। এই মাছের আকৃতি, রঙ ও বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। স্রোতের বীপরিতে চলে বৈরালি। এই মাছের জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে সারাদেশে এর বাজার প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি বিদেশেও বাজার বিস্তার করার সুযোগ আছে।
রংপুরের শিল বিলাতি আলু
রংপুরের বেশ প্রসিদ্ধ এক প্রকার আলুর নাম শিল বিলাতি আলু। এটি আঠালো হওয়ার কারণে ভর্তা খুবই সুস্বাদু হয়। এই আলু দেখতে লাল হয়ে থাকে। প্রচলিত আছে, “রংপুর অঞ্চলের ডাল ও শিল-বিলাতি আলু ভর্তা-ভাত খেতে বসলে উঠতে মন চায়না।” রংপুরের এই বীজ কুমিল্লা অঞ্চলে উৎপাদনের চেষ্টা করে সফলতা আসেনি। তাই বলা যায় এটি রংপুরের মাটি ও জলবায়ুর জন্য বিশেষ উপযোগি।
ইঁদুর আলু
এই আলু দেখতে ইঁদুরের মতো হওয়ার কারণেই সম্ভবত নামকরণ হয়েছে ইঁদুর আলু। তা লম্বা, চিকন ও লাল রঙের হয়ে থাকে। অন্য যেকোন আলুর চেয়ে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ইঁদুর আলুর বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত ভর্তা ও ভাজির জন্য ব্যবহার করা হয় ইঁদুর আলু। জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে এই আলু সর্বত্র পরিচিতি করানোর সুযোগ রয়েছে। তা করা গেলে রংপুরের কৃষকের ভাগ্যের চাকা বদলাবে।
রংপুরের বেনারসি
রংপুর জেলার গঙ্গাড় উপজেলা বেনাসির জন্য বিখ্যাত। এখনাকার বেনাসরি খ্যাতি বহুদূর গড়িয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ স্পিকার পর্যন্ত পরিধান করেন রংপুরের বেনারসি। দেশের বাজারের পাশাপাশি এসব বেনারসি যায় বিদেশেও। যা রংপুর তথা দেশের অর্থনীতি ও ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করছে। রংপুরের বেনারসি পল্লীতে শাড়ি উৎপাদনের পাশাপাশি আরও উৎপাদন হয় পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিস।
সিদল
রংপুর অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে সিদল। এই সিদল অনলাইন উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এটি টাকি মাছ দিয়ে রান্না করে খাওয়া হয় ভর্তা হিসেবে। সিদলের জিআই স্বীকৃতি পেলে রংপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সারাদেশের ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
রংপুরের টুপি
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নারীদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে টুপি শিল্প। এখানকার টুপি নারীদের দ্বারাই তৈরি করা হয়। যা হয়ে থাকে সুই সুতা আর হাতের ব্যবহারে। অর্থাৎ এখানে নেই কোন মেশিনের ব্যবহার। রংপুরের টুপি অন্য যেকোন টুপির চেয়ে স্বতন্ত্র। এখানকার টুপির দামও বেশি। সাধারণত ৫০০-২০০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এই টুপি দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি রেমিট্যান্স অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ওমান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন সহ মুসলিম প্রদান দেশগুলোতে রপ্তানি হয় প্রতি নিয়ত। তাই এই টুপির জিআই স্বীকৃতি পেলে দেশে বিদেশে টুপির বাজার আরও অনেক বড় হবে।
Jenish Farzana Tania আপুকে অসংখ্য ধন্যবাদ রংপুরের সম্ভাব্য জি আই পণ্য গুলো তুলে ধরেছেন।
পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপু