কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

দেশে দিনে দিনে বাড়ছে জিআই পণ্যের সংখ্যা। স্থানীয় অর্থনীতিতে জিআই পণ্য অতুলনীয়। কক্সবাজারের অর্থনীতিতে পর্যটনখাত ব্যাপক অবদান রাখলেও তা আরও সমৃদ্ধ করতে অবদান রাখতে পারে জিআই পণ্য। আজকে লিখছি কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে। এসব পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলে পর্যটকদের পাশাপাশি দেশ বিদেশে চাহিদা বাড়বে অনেক বেশি। এর ফলে ব্র্যান্ডিং ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সহ অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য শুটকি
কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য শুটকি

শুঁটকি

শুটকির জন্য বিখ্যাত সামুদ্রিক ও পর্যটন বান্ধব জেলা কক্সবাজার। এখানে সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত মাছ থেকে তৈরি হওয়া শুটকিতে রাসায়নিক মিশ্রণ না থাকার কারণে পর্যটকদের কদর লাভ করেছে শুটকি। দেশ বিদেশ থেকে কক্সবাজারে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের বাড়ি ফেরার পথে শুঁটকি থাকে সাথে। পাওয়া যায় সবচেয়ে বড় বড় সাইজের শুটকি। শুটকিকে পর্যটন পণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার। এ জেলায় রয়েছে একটি শুঁটকি পল্লী। যেখানে গিয়ে শুঁটকি উৎপাদন পদ্ধতি নিজ চোখে দেখার সুযোগ পায় পর্যটকরা।

তরকারি, আচার সহ নানাভাবে খাওয়া হয় শুটকি। এটিকে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারও বলা চলে। কক্সবাজারের শুঁটকি জিআই স্বীকৃতি অর্জন করলে রপ্তানি বাজার বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্গানিক শুঁটকি ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র।

বাগেরহাটের সম্ভাব্য জিআই পণ্য সুন্দরবনের কাঁকড়া
বাগেরহাটের সম্ভাব্য জিআই পণ্য সুন্দরবনের কাঁকড়া

কাঁকড়া

কক্সবাজারের অর্থকরী পণ্যের মধ্যে কাঁকড়া অন্যতম। নরম খোসাযুক্ত হয়ে থাকে এই কাঁকড়া। দেশের অভ্যান্তরে বাজারজাত করার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাঁকড়া একটি কদরের শিল্প।

বহুকাল ধরে সামুদ্রিক কাঁকড়া ধরা, খাওয়া ও রপ্তানি করা হলেও বাণিজ্যিক প্রসারের লক্ষ্যে নব্বই এর দশকে জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে সরকার। কাক্সবাজারের কাঁকড়া জিআই স্বীকৃতি অর্জন করতে পারলে রপ্তানি বাজার আরও সমৃদ্ধ হবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

বরিশালের পান
কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য পান

মহেশখালীর পান

”যদি সুন্দর একটা মন পাইতাম / মহেশ খালির পানের খিলি তারে / বানাই খাওয়াইতাম….” বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পি সাবিনা ইয়াসমিনের এই ইচ্ছার কথা হয়তো জানার বাকি নেই কারো। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় দুই ধরনের পানের চাষ হয়ে থাকে। ১. মিঠা পান ও ২. সাচি পান। দুই ধরনের পানের রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য ও কদর। মহেশখালীতে বসবাসকারী অদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন পেশার মধ্যে মিঠা পানের চাষ অন্যতম। এই পান দেখতে ছোট ও স্বাদে হয় মিষ্টি।

সাচী পান উৎপাদনে পিছিয়ে নেই কক্সবাজারের মহেশখালী। এখানে দুই ধরনের পান চাষ হয়। পাহাড়ে ও বিলে। পাহাড়ি বরজ স্থায়ী চাষ আর বিল বরজ হয় অস্থায়ীভাবে। মহেশখালীতের ১৩ হাজারের বেশি চাষির উৎপাদিত পান সারাদেশ সহ পৃথীবির বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে কক্সবাজারের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।

কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য লবণ
কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য লবণ

কক্সবাজারের লবণ

লবণের গ্রাম বাংলার আরেকটা আদুরে নাম হচ্ছে নুন। এটি কক্সাবাজারে ভালো জন্মায়। দৈনন্দিন জীবন এই নুন বা লবণ ছাড়া চলতে পারা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। তরতারিক থেকে শুরু করে নানাভাবে এবং নানা কিছুর সাথে মিশ্রণ ঘটিয়ে লবণ খাওয়া হয়। তবে শুধু লবণ খেতে দেখা যায় না। লবণের যেই ভিন্ন রকমের স্বাদ রয়েছে তা হুবহু কোথাও পাওয়া যায় না। যেকোন খাবারে স্বাদ যুক্ত করতে লবণের বিকল্প বা সমকক্ষ নেই বললেই চলে।

দেশে লবণ উৎপাদন কক্সবাজার জেলার উপকূলে। এখানে ৯টি উপজেলাতে লবণ চাষ হয়। অতীতে লবণের জন্য আমদানি নির্ভরতা থাকলেও কক্সবাজারে দিনে দিনে লবণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে রপ্তানি সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। স্বাধীনতার পূরণ থেকে লবণ উৎপাদন হচ্ছে কক্সবাজারে। এটি জিআই স্বীকৃতি পেলে দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখবে।

1 thought on “কক্সবাজারের সম্ভাব্য জিআই পণ্য”

  1. আপু কক্সবাজারে চিংড়ি ও পাওয়া যায়। তাছাড়া চকরিয়ার মহিষের দই ও বিখ্যাত।

Leave a Reply

Scroll to Top