বাংলাদেশে ই-কমার্সের সুযোগ : শীর্ষক ওয়ার্কশপ

বাংলাদেশে ই-কমার্সের সুযোগ : শীর্ষক ওয়ার্কশপ

ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি) এর সহযোগিতায় এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের আয়োজনে নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে “বাংলাদেশে ই-কমার্সের সুযোগ” শীর্ষক ওয়ার্কশপ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ২০ জন দেশি পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা এবং ৩০ জন ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।

স এ এম দিলরুবা আলম নিপা

ওয়ার্কশপের শুরুতে শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তাদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, ড. ফা. লিওনার্ড শঙ্কর রোজারিও, সিএসসি, ড. পরিমল চন্দ্র দত্ত, অধ্যাপক, চেয়ারপারসন এবং সমন্বয়কারী, বিবিএ এবং এমবিএ প্রোগ্রাম, বিজনেস স্টাডিজ বিভাগ, রাজিব আহমেদ, সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ই-ক্যাব, ফা. সুভাষ আদম পেরেরা, সিএসসি, সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ, ফা. চার্লস বি. গর্ডন, সিএসসি, সদস্য (প্রস্তাবিত, পিভিসি), অধ্যাপক, ড, অলোক কুমার চক্রবর্তী, ডিন, আফ্রিস্তা বিরজিস, সহকারী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন।

আরও বক্তব্য রাখেন, কাকলী তালুকদার, প্রেসিডেন্ট, ইডিসি, জেনিস ফারজানা তানিয়া, স্বত্বাধিকারি, আলিয়া’স কালেকশন এবং আরজেনা হক সেবতি, স্বত্বাধিকারি, সেবতি’স ড্রেস কর্ণার।

কাকলী তালুকদার, প্রেসিডেন্ট, ইডিসি
কাকলী তালুকদার, প্রেসিডেন্ট, ইডিসি

গত ২২ আগস্ট এই ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় প্রশাসনের শ্রেণি কক্ষে। এতে লকচার দেন এস এ এম দিলরুবা আলম নিপা, স্বত্বাধিকারী, বিশুদ্ধতায় তৃপ্তি। ওয়ার্কশপ শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করা হয়।

অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান

আলিয়া’স কালেকশনের স্বত্বাধিকারি জেনিস ফারজানা তানিয়ার বক্তব্যের শ্রুতিলিখন: সঞ্চালক…কে ধন্যবাদ। সময় উপযোগী বিষয়ের উপর ওয়ার্কশপ আয়োজন করার জন্য নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ও ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি)-কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের মাঝে যখন দাঁড়াই তখন তাদের মাঝে আগামীর উন্নয়ন, পরিবর্তনগুলো দেখতে পাই। আজও ব্যতিক্রম নয়।

জেনিস ফারজানা তানিয়া, স্বত্বাধিকারি, আলিয়া’স কালেকশন
জেনিস ফারজানা তানিয়া, স্বত্বাধিকারি, আলিয়া’স কালেকশন

এই শিক্ষার্থীরাই আগামীর ভবিষ্যত। আগামীতে আপনারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে অবদান রাখবেন। রাজধানীর অর্থনীতি, উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা যেভাবে এগিয়ে চলছে সেভাবে তাল মিলিয়ে আগাতে পারছে না জেলা ভিত্তিক অর্থনীতি, উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা। জেলার আর রাজধানীর যে পার্থক্য আমরা দেখছি তা প্রযুক্তির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দূরীকরণ করতে হবে। এদিকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন আপনারা। বর্তমানে গ্রামে বসেও ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যায়। সেই তুলনায় জেলা শহরের ইন্টারনেট সুবিধা আরও উন্নত। তাই জেলার উন্নয়ন, জেলার অর্থনীতি, কর্মসংস্থান এসব নিয়ে এখন থেকে আপনাদের চিন্তা করতে হবে।

এখন হয়তো চিন্তা করছেন ভালো চাকরি হবে কি হবে না। কারো কারো স্বপ্ন হয়তো বিদেশ যাওয়া। আমি নিশ্চত বলতে পারি নটরডেমের যেই ঐতিহ্য রয়েছে আপনারা ভালো করবেন একটা সময়। এর জন্য হয়তো ৫-১০ বছর সময় লাগবে। কিন্তু আপনারা প্রায় সবাই ভালো করবেন। তাই আপনাদের ভাবনা এবং দৃষ্টি জেলার দিকে নিতে হবে। নিজের জেলা, নিজের জন্ম স্থানের উন্নয়ন হলে এর সুবিধা জেলার মানুষের পাশাপাশি ভোগ করবে নিজের পরিবার, প্রতিবেশ আত্মীয় স্বজনরা। এতে করে তারাও একটু উন্নত সুবিধা ভোগ করতে পারবে এবং নিজের পাশাপাশি নিকটাত্মীয়দেরও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

ওয়ার্কশপ সম্পন্ন হয়েছে
নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে “বাংলাদেশে ই-কমার্সের সুযোগ” শীর্ষক ওয়ার্কশপ

ঢাকায় এসে সফল হই, জেলাগুলোকে ভুলে যাই। ঢাকায় সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বাহিরে কিছুই নেই। আপনারা এখন থেকে ইন্টারনেটের শক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন এবং নিজ জেলার উন্নয়নে চিন্তা করবেন। ই-কমার্স, ই-লার্নিং ও ইন্টারনেটে ভূমিকা রাখতে পারে অনেক বেশি। আপনাদের দরকার সচেতন ভাবে মনোনিবেশ করা।

নিজ জেলা নিয়ে কাজ করার জন্য প্রায় সবদিকেই ফাকা আছে। আমি একটা উদাহরণ দিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করবো, আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন আমাদের জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, ব্যবসা বাণিজ্য, সাহিত্য, পর্যটন সহ সার্বিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে সমৃদ্ধ করে কোন ওয়েবসাইট নেই। কেউ যদি মনে করেন যে, এখন থেকে নিজ জেলার উপর একটি সমৃদ্ধ জেলা ওয়েবসাইট করবেন এবং অল্প অল্প করে কনটেন্ট আপলোড করতে থাকবেন তাহলে ২ বছর পর গিয়ে এটি খুবই একটি সমৃদ্ধ ওয়েবসাইটে পরিণত হবে। সার্চ রেজাল্টেও বেশ গুরুত্ব পাবে এবং মানুষের কাছেও পরিচিতি পাবে।

২০ জন দেশি পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা
বাংলাদেশে ই-কমার্সের সুযোগ ওয়ার্কশপে ২০ জন দেশি পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা

এরপর এই ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে নানারকম ব্যবসা। যেমন: এটি ই-কমার্সেও দারুণভাবে সাহায্য করবে। জেলা ভিত্তিক পণ্যের সোর্সিং করা বেশ সহজ, এতে তেমন পুঁজির প্রয়োজন নেই। ট্যুর গাইড হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে অবদান রাখবে, এমনকি জেলা ভিত্তিক চাকরি পোর্টাল, মার্কেট প্লেস-সহ নানা দিকে কাজ করার সুযোগ তৈরি করবো।

আমি আর কথা বাড়াবো না। তবে আপনাদের কাছে আশা রাখবো জেলা ভিত্তিক অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন নিয়ে এখন থেকে চিন্তা করা এবং কাজ করার। সকলের ভবিষ্যত উজ্জল হোক। 

Scroll to Top