কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য

দেশের প্রাচীন জেলাগুলোর মধ্যে কুমিল্লা জেলা একটি। প্রাচীনকালে এটি সমতট জনপদের অংশ ছিল। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমলে ত্রিপুরার একটি জনপদ হয়ে উঠে কুমিল্লা। সে সময় ত্রিপুরা অঞ্চলের কেন্দ্র হয় বর্তমান কুমিল্লা। ১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ হয় কুমিল্লা নামে। এরপর ১৯৮৪ সালে এই জেলা থেকে চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পৃথক করে আলাদা আলাদা জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নানারকম আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখলেও অর্থনৈতিক সংগ্রামে অবদান রেখে চলছে গভীরভাবে। কুমিল্লার অর্থনীতিতে কৃষি খাতের পাশাপাশি বৈচিত্রতা রয়েছে। প্রবাসী আয়, শিল্প আয়ও কম নয়। এই প্রাচীন জনপদের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে আলোচনা করবো আজ।

বাংলাদেশের সর্বশেষ স্বীকৃতি জিআই পণ্যগুলোর একটা কুমিল্লার রসমালাই। এই রসমালাই কুমিল্লা জেলার পরিচিতিকে নিয়ে গেছে বিশ্ব দরবারে। রসমলাই ছাড়াও কুমিল্লায় আরও নানা রকম পণ্য রয়েছে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার মতো। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুমিল্লার খাদি।

কুমিল্লার খাদি
কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য খাদি বস্ত্র

কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য কুমিল্লার খাদি

কুমিল্লার খাদি শিল্পের ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। কুমিল্লায় খাদি শিল্পের প্রসার ঘটে স্বদেশী আন্দোলনের সময়। এই আন্দোলন জোড়ালো এবং ফলপ্রসূ করতে খাদি কাপড়ের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কুমিল্লার খাদি বাংলাদেশের একটি অন্যতম পোশাক হিসেবে পরিচিত। এর সাথে জড়িয়ে আছে মানুষের কর্মংস্থান ও দেশীয় সংস্কৃতি। এই পণ্যটি জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে।

শরীয়তপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য
কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য মৃৎশিল্প

বিজয়পুরের মৃৎশিল্প

লোক শিল্পের ঐতিহ্য কুমিল্লা বিজয়পুরের মৃৎশিল্প। প্রাচীনকাল থেকে জিবয়পুরে উৎপাদন হয়ে আসছে কলসি, হাঁড়ি, ঢাকনা সহ নানাকরম মাটি পাত্র। যা আমাদের পরিবেশকেও রক্ষা করতে ভূমিকা রাখে। এই শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৬১ সালে বার্ডের প্রতিষ্ঠাতা ড. আখতার হামিদ খান ‘বিজয়পুর রুদ্রপাল মৃৎশিল্প সমবায় সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সমিতি ক্ষতিগ্রস্থ হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অনুদানের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড় করাতে ভূমিকা রাখেন। সূত্র: ইন্টারনেট।

কুমিল্লার শীতল পাটি
শীতল পাটি কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য। ছবি: উইকিপিডিয়া

কুমিল্লার শীতল পাটি

ময়নামতিতে উৎপাদিত শীতল পাটির সাথে ঐ অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। এটি বিয়েতে ব্যবহৃত একটি অন্যতম অনুসঙ্গ। এই শীতল পাটি তৈরির হুক্কা/মোর্তাক কালো রং এর হয়ে থাকে, যা অন্য জেলায় হয় না। প্রচলিত আছে পুত্রবধূকে রং করা শেখানো হয় কিন্তু কন্যা সন্তানকে শেখানো হয় না। ধারণা করা হয় কন্যা সন্তানকে শেখানো হলে শীতল পাটির রং করা এবং উৎপাদন কৌশলের গোপনীয়তা নষ্ট হবে। এই প্রাচীন পণ্যটি জিআই মর্যাদা দেওয়ার জন্য কাজ করা যেতে পারে।

2 thoughts on “কুমিল্লার সম্ভাব্য জিআই পণ্য”

  1. কুমিল্লার খাদি পণ্য দেশ ও দেশের বাইরে অনেক সমাদৃত৷ এ পণ্যের সাথে সমৃদ্ধ ইতিহাস জড়িত৷ এ ধরনের কন্টেন্ট গুলো নিশ্চয়ই এর প্রচারে আরও ভূমিকা রাখবে৷ জি আই ট্যাগ পাওয়া মানে যেকেনো পণ্যের সাথে সে জেলার বা দেশের ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন চলে আসা৷

Leave a Reply

Scroll to Top