জামালপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

জামালপুর একটি নদীমাতৃক জেলা। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা বয়ে গেছে জামালপুরের উপর দিয়ে। তাই এ জেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ প্রতি বছর বন্যার সাথে লড়াই করে বাঁচতে হয়। জামালপুর এখন নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠলেও মানুষের জীবন ও জীবিকা কৃষির সাথে। কারণ নদীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে এখানে চরাঞ্চল বেশি এবং মাটি হয় উর্বর। দেশে প্রতিনিয়ত জিআই পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও জামালপুর জেলায় নেই একটিও। তাই জিআই পণ্যের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে জেলাবাসীকে উদ্যোগী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আজকে আলোচনা করবো জামালপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।

জামালপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

জামালপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য
জামালপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য। ছবি: ইন্টারনেট

নকশিকাঁথা

নকশিকাঁথার সাথে মিশে আছে জামালপুর জেলাবাসীর ঐতিহ্য ও জীবনযাত্রা। হাজার হাজার নারীর কর্মসংস্থান হয় এই নকশিকাঁথা ঘিরে। তারা স্বপ্ন বুনে নকশিকাঁথার উপার্জন দিয়ে। নকশিকাঁথার কথা উল্লেখ আছে ময়মনসিংহ গীতিকা, জসীম উদদীননের নক্সী কাঁথার মাঠ সহ অগণিত জায়গাতে। এছাড়াও জামালপুরের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির সাথে নকশিকাঁথার রয়েছে গভীর সম্পর্ক। তাই এই নকশিকাঁথাকে প্রাধান্য দিয়ে ‘জামলপুরের নকশিকাঁথা, বাংলাদেশের গর্বগাথা’ স্লোগানে জেলা প্রশানের পক্ষ থেকে ব্র্যান্ডিং ট্যাগলাইন নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও জামালপুরের নকশিকাঁথার জিআই আবেদন চেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিপিডিটি বরাবর করা হয় ২০১৭ সালে। জামালপুরের নকশিকাঁথা এখন জিআই স্বীকৃতির চূড়ান্ত ধাপে আছে। এটি জিআই স্বীকৃতি অর্জন করে জামালপুরের পরিচিতি, জেলা ব্র্যান্ডিং ও অর্থনীতিকে বৃদ্ধি করতে পারে।

ম্যান্দা বা পিঠালি
ছবি: ইন্টারনেট

ম্যান্দা বা পিঠালি

এটি জামালপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। মাংস আর চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু ম্যান্দা। এটিকে আবার কেউ কেউ পিঠালিও বলে। তাই ম্যান্দা বা পিঠালি উভয় নামেই পরিচিত। বলা হয় বিয়ে, দোয়া-মাহফিল বা আকিকা সহ যেকোন অনুষ্ঠানে ম্যান্দা ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটির ইতিহাস শতাধিক বছরের পুরানো। এই খাবার জিআই স্বীকৃতির আওতায় আনার মাধ্যমে জামালপুরের সংস্কৃতিকে আরও অনন্য মর্যাদা দেওয়ার সুযোগ আছে। এছাড়াও ম্যান্দার পরিচিতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিপননের সুযোগ রয়েছে।

প্যাঁরা সন্দেশ
ছবি: প্যাঁরা সন্দেশ

প্যাঁরা সন্দেশ

সরাসরি গুরুর দুধ থেকে তৈরি হয় সরিষাবাড়ির প্যাঁরা সন্দেশ। এটি সরিষাবাড়ীর ঐতিহ্য। প্যাঁরা সন্দেশ শুকনা প্রকৃতির হওয়ার কারণে দেশেরে যেকোন স্থানে নেওয়া যায় এবং দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করা যায়। তা সারাদেশ সহ বিদেশেও যায় প্রবাসীদের মাধ্যমে। জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায় যুগ যুগ ধরে উৎপাদন হয়ে আসছে এই প্যাঁরা সন্দেশ। উপেজেলার প্রায় সব মিষ্টির দোকানে উৎপাদন ও বিক্রি হয় তাদের বাপদাদার আমল থেকে। এই সন্দেশেরে সাথে সরিষাবাড়ির ব্র্যান্ডিং ও স্থানীয় কর্মসংস্থান জড়িয়ে থাকার কারণে জিআই স্বীকৃতি পেতে পারে জামালপুর সরিষাবাড়ির প্যাঁরা সন্দেশ।

জামালপুর জেলাবাসী নকশিকাঁথা সহ নকশি পণ্য, পিঠালি ও অন্যান্য পণ্যগুলোর জিআই স্বীকৃতি নিয়ে কাজ করতে পারে।

Leave a Reply

Scroll to Top