চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি জেলার নাম চাঁদপুর। ইলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন অঞ্চল হওয়ার কারণে জেলা ব্র্যান্ডিং ট্যাগলাইন নির্ধারণ করা হয়েছে “ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর” নামে। মৎস্য সম্পদের পাশাপাশি জেলার অর্থনীতিতে অবদান রাখছে কৃষি শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প। চাঁদপুরে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার বেশ কিছু পণ্য থাকলেও একটিও নেই জিআই পণ্যের তালিকায়। তাই আজকে আলোচনা করবো চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।

চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

মতলবের ক্ষীর
চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য। ছবি : ইন্টারনেট

মতলবের ক্ষীর

চাঁদপুরে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত খাবারগুলোর মধ্যে মতলবের ক্ষীর অন্যতম। শতাধিক বছর পেরিয়ে গেলেও মতলবের ক্ষীরের স্বাদ ও মান একই আছে। যেকোন ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয় এই ক্ষীর। প্রবাদে আছে, ”মতলবের ক্ষীর, বগুড়ার দই; না খেয়ে ক্যামনে রই!” ক্ষীর ব্যবসার সাথে গনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে কিছু ঘোষ পরিবার। তাদের তত্বাবধায়নে এই ক্ষীর টিকে আছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। চাঁদপুর থেকে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য বিশেষ গুরুত্ব পাবে মতলবের ক্ষীর।

ফরিদগঞ্জের মিষ্টি

চাঁদপুরের বিখ্যাত মিষ্টির মধ্যে ফরিদগঞ্জের মিষ্টি অন্যতম। সেখানে অনেকগুলো দোকান থাকলেও আওয়ালের মিষ্টি বেশি পরিচিত। আওয়ালের মিষ্টি দোকান সহ অন্যান্য দোকানগুলোর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে পূরণ হয় চাহিদার অনেকটা। যদিও চাহিদার শতভাগ এখনো পূরণ করতে পারে না ফরিদগঞ্জের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। সেখানকার মিষ্টি জিআই স্বীকৃতি পেলে চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ী আগ্রহ হবেন নিশ্চেই। একই সাথে নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে ফরিদগঞ্জে।

হাতে ভাজা মুড়ি
ছবি: ইন্টারনেট

হাতে ভাজা মুড়ি

হাতের ভাজার মুড়ি চাঁদপুরের ঐতিহ্য। গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে প্রান্তিক নারীরা হাতে ভাজার মুড়ির সাথে জড়িত। এই মুড়ির স্বাদ অতুলনীয়। এ জেলায় অসংখ্য নারী আছে যাদের মুড়ি ভাজার অভিজ্ঞতা ৪-৫ দশকের। সারাদেশের তুলনায় রমজান মাসে বেড়ে যায় মুড়ির চাহিদা। তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলাতেও যায়। এই মুড়ি জিআই স্বীকৃতি পেলে উৎপাদন সংশ্লিষ্ট নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি তাদের কদর বাড়বে। একই সাথে চাঁদপুরের হাতে ভাজা মুড়ির খ্যাতি ও চাহিদা বাড়বে।

চাঁদপুরের সুপারি

সুপারি চাঁদপুর জেলার প্রায় সব উপজেলাতে উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে হাইমচর এলাকায় সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। চাঁদপুরের সুপারি চাষের সাথে মেঘনা নদীর পানি ও স্থানীয় জলবায়ুর প্রভাব থাকতে পারে। তাই এই সুপারির আকার, আকৃতি ও স্বাদ ভিন্ন। চাঁদপুরের সুপারির স্বতন্ত্র দিকগুলো খুঁজে বের করে জিআই স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে।

চাঁদপুরের সুপারি
চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য। ছবি: ইন্টারনেট

নারকেলের ছোবড়া শিল্প

চাঁদপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণে নারকেল উৎপাদন হয়। এসব নারকেল আকারে বড় হওয়ার পাশাপাশি মিষ্টি স্বাদে হয়ে থাকে। দামও সামান্য। অর্থাৎ ২৫-৩০ টাকায় পাওয়া যায় এক জোড়া নারকেল। এসব নারকেল থেকে প্রাপ্ত ছোবড়ার বিশেষ কদর ও বাজার তৈরি হয়েছে। চাঁদপুরের নারকেল ছোবড়ার বিশেষ বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।

2 thoughts on “চাঁদপুরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য”

  1. Md. MizanurRahman

    চাঁদপুরের বাঁশের তৈরি বিভিন্ন রকম পণ্য হতে পারে জি পণ্য। চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন রকম কৃষি পণ্যও হতে পারে জি আই পণ্য।

Leave a Reply

Scroll to Top