সিলেট বিভাগের একটি জেলার নাম হবিগঞ্জ। শিক্ষা, সাহিত্য ও অর্থনীতিতে একটি অগ্রসর জেলা এটি। এখানারকার মানুষের উপার্জনের প্রধান মাধ্যম কৃষি কাজ। এর মধ্যে ধান ছাড়াও চা বাগান, রাবার বাগান উল্লেখযোগ্য। হবিগঞ্জেরে কিছু শিল্প কারখানাও রয়েছে।
হবিগঞ্জে বাঙালিদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদেরও বসবাস রয়েছে। তাদের প্রায় সবকিছুতেই আছে ভিন্নতা ও বৈচিত্রতা। এমনকি পেশা ও খাদ্যাভ্যাসে। হবিগঞ্জে নানাদিকে বৈচিত্র থাকলেও কোন জিআই পণ্য নেই। তাই আজকে আলোচনা করবো হবিগঞ্জের সম্ভাব্য জিআই পণ্য নিয়ে।
হবিগঞ্জের সম্ভাব্য জিআই পণ্য চা
চা শিল্পের জন্য হবিগঞ্জ বেশ বিখ্যাত। এই জেলার চা দেশের চাহিদায় জোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও রপ্তানি হয় বিভিন্ন কোম্পানীর মাধ্যমে। হবিগঞ্জের চা চাষ শুরু হয়েছিল বহু আগে থেকে। এখানকার চায়ের স্বত্বন্ত্র বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করে জিআই স্বীকৃতি অর্জনের চেষ্টা করার সময় এসেছে। মৌলভীবাজারের কোন চা জিআই স্বীকৃতি পেলে তা জেলা ব্র্যান্ডিং এর পাশাপাশি জেলার অর্থনীতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
হবিগঞ্জের ছিকর
এঁটেল মাটি থেকে প্রস্তুতকৃত পোড়ামাটির খাদ্যের নাম ছিকর। এটির উৎস এলাকা হবিগঞ্জ। এখানকার কিছু মানুষের প্রধান খাবার হিসেবে ছিকর বিবেচিত। উৎপাদন পদ্ধতিতে রয়েছে বৈচিত্র। যেহেতু সব জায়গার মাটি দিয়ে ছিকর উৎপাদন করা সম্ভব হয় না তাই বলা যায় এটি কেবল হবিগঞ্জের পাহাড়ি এঁটেল মাটি দ্বারাই প্রস্তুত করা যায়। মূলত নারীরাই এই ছিকর তৈরি ও বিক্রির সাথে জড়িত। ছিকরকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পরগনায় একটি শিল্প গড়ে উঠেছে। এই ছিকর তাদের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। ছিকর ললিপপ ও বিস্কুটের আকৃতির হয়ে থাকে। এই অঞ্চলের নারীরা বংশপরম্পরায় ছিকর শিল্পের সাথে জড়িত। কারিগরি দক্ষতা কিংবা মাটির হেরপের হলে ছিকরের ঘ্রাণ ও স্বাদ খুঁজে পাওয়া কষ্ট। ছিকরের জিআই স্বীকৃতি অর্জনের পর আফ্রিকা অঞ্চলে রপ্তানির সুযোগ আছে হবিগঞ্জের ছিকর।১ ২
চা এবং ছিকর ছাড়াও হবিগঞ্জের বিশেষ পণ্যগুলো জিআই স্বীকৃতির অধীনে আনার চেষ্টা করা দরকার। বিশেষ করে যেসব পণ্যের সাথে এই অঞ্চলের মানুষের কারিগরি দক্ষতা জড়িত, প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত অথবা কৃষি বা শিল্পজাত পণ্যগুলো। অর্থাৎ জিআই আইন অনুসারে যেসব পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেতে পারে সে সব পণ্যের জিআই স্বীকৃতি চেষ্টা করার সুযোগ রয়েছে।